Friday, May 17, 2019

দানবীর হাজী মুহাম্মাদ মহসীন একজন সমাজ সংস্কারকঃ (মুহাঃ মহসীনভূঁইয়া)

দানবীর হাজি মুহাম্মদ মহসিনঃ
মুহাম্মদ মহসীন ভূঁইয়া

হাজি মুহাম্মদ মহসিন ১৭৩২ সালে পশ্চিম বঙ্গের হুগলিতে জন্মগ্রহণ করেন, তার বাবা হাজি ফয়জুল্লাহ ও মা জয়নাব খানম। ফয়জুল্লাহ ছিলেন একজন ধনী জায়গিরদার। তাঁর পূর্ব পুরুষের আদি নিবাস ছিল সুদূর ইরানের পারস্যে। সেখান থেকে ভাগ্য অন্বেষণে এসেছিলেন ভারত বর্ষে। তারপর স্থায়ীভাবে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি শহরে বসবাস শুরু করেন। জয়নব খানম ফয়জুল্লাহর দ্বিতীয় স্ত্রী। জয়নবেরও পূর্বে বিয়ে হয়েছিল। মন্নুজান খানম নামে তার ঘরে সাবেক স্বামী আগা মোতাহারের একটি মেয়ে ছিল। আগা মোতাহার বিপুল সম্পদের মালিক ছিলেন। হুগলি, যশোর, মুর্শিদাবাদ ও নদীয়ায় তার জায়গির ছিল। আগা মোতাহারের সম্পত্তি তার মেয়ে মন্নুজান উত্তরাধিকার সূত্রে অর্জন করেছিলেন।
গৃহশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে মহসিন ও তার সৎ বোন মন্নুজান শিক্ষার্জন করেছেন। পরবর্তীতে উচ্চ শিক্ষার জন্য রাজধানী মুর্শিদাবাদে যান। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি দেশভ্রমণের সফরে বের হন। সফরকালে তিনি হজ পালন করেন এবং মক্কা, মদিনা, কুফা, কারবালাসহ ইরান, ইরাক, আরব, তুরস্ক এমন নানা স্থান সফর করেছেন।

১৮০৩ সালে মন্নুজানের মৃত্যুর মহসিন তার উত্তরাধিকারী হিসেবে সম্পদের মালিক হন। মহসিন খুব ধার্মিক ছিলেন এবং সহজসরল জীবনযাপন করতেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন একজন চিরকুমার। তার বিপুল সম্পদ দান সদকায় ব্যয় করতেন। ১৭৬৯-৭০ সালের সরকারি দলিল অনুযায়ী তৎকালীন দুর্ভিক্ষের সময় তিনি অনেক লঙ্গরখানা স্থাপন করেন এবং সরকারি তহবিলে অর্থ সহায়তা প্রদান করেন।১৮০৬ সালে তিনি মহসিন ফান্ড নামক তহবিল প্রতিষ্ঠা করে তাতে দুইজন মোতাওয়াল্লি নিয়োগ করেন।ব্যয়নির্বাহের জন্য সম্পত্তিকে নয়ভাগে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে তিনটি ভাগ ধর্মীয় কর্মকাণ্ড, চারটি ভাগ পেনশন, বৃত্তি ও দাতব্য কর্মকাণ্ড এবং দুইটি ভাগ মোতাওয়াল্লিদের পারিশ্রমিকের জন্য বরাদ্দ করা হয়।
হাজি মুহাম্মদ মহসিন ১৮১২ সালে হুগলিতে ইন্তেকাল করেন। তাকে হুগলি ইমামবাড়ায় দাফন করা হয়।
দানশীলতার কারণে তিনি কিংবদন্তীতে পরিণত হন এবং বর্তমানেও দানের ক্ষেত্রে তুলনা অর্থে তার দৃষ্টান্ত ব্যবহার হয়ে থাকে। পাঠকদের জন্য এই মহান ব্যক্তির কর্মময় জীবনের বিস্তারিত তুলেধরা হলো-

দানবীর হাজি মুহাম্মদ মহসিনের অবদান বাংলার ইতিহাসে অনস্বীকার্য। তিনি শুধু দানবীরই ছিলেন না, তিনি ছিলেন মানুষের প্রতি মায়া-মমতার মূর্ত প্রতীক। মুসলমান জনগোষ্ঠীকে উচ্চ শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে ১৮০৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ‘মহসিন ফান্ড’ নামক সংস্থায় গঠন করে তাঁর সর্বস্ব দান করেছিলেন। দান ও মহানুভবতার জন্য তার অবদান মানব ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে আছে।

হাজি মুহাম্মদ মহসিনের মা জয়নব খানম ছিলেন সম্রাট আওরঙ্গজেবের খাজাঞ্চি আগা মোতাহারের দ্বিতীয় স্ত্রী। ভাগ্যের অন্বেষণে ভারতবর্ষে আসা আগা মোতাহার সম্ভ্রান্ত বংশের সন্তান ছিলেন। তাঁর প্রথম স্ত্রীর ঘরে কোনো সন্তান না হওয়ায় তিনি জয়নব খানমকে সন্তান লাভের আশায় বিবাহ করেন। দীর্ঘ দিন পর মোতাহারের দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে জন্ম নিল কন্যা সন্তান মন্নুজান। আগা মোতাহার এক সময় তাঁর মেয়ের নামে তাঁর সমস্ত সম্পত্তি দান করেন। মন্নুজান ছোট থাকায় এ দানপত্র তিনি একটি মাদুলিতে ভরে তাঁর গলায় পরিয়ে দেন এবং তাঁর মৃত্যুর পর তা দেখার জন্য উপদেশ দেন।
আগা মোতাহারের মৃত্যুর পর মন্নুজান সবে মাত্র কৈশোরে পদার্পন করেছে। সে মাদুলি খুলে দেখেন আগা মোতাহার তার সমস্ত সম্পদ মেয়ের নামে লিখে দিয়ে গেছেন। যা দেখে জয়নব খান মন্নুজানকে হাতছাড়া করতে চাচ্ছিলেন না। পরে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করলেন আগ মুহাম্মদ ফয়জুল্লাহকে। এ ঘরেই জন্ম গ্রহণ করেন দানবীর হাজি মুহাম্মদ মহসিন। তখন সৎ বোন মন্নুজানের বয়স ১৩ বছর। মন্নুজানও ভাই পেয়ে মহাখুশী। হাজি মুহাম্মদ মহসিনের লালন–পালন, দেখাশুনা ও বাল্য শিক্ষা মন্নুজানের তত্ত্বাবধানেই চলতে লাগলো।

স্থানীয় মাদরাসায় শিক্ষা গ্রহণ শুরু করেন হাজি মুহাম্মদ মহসিন। সেখানে তিনি আরবি ও ফারসি ভাষা শিখতেন। অল্প বয়সে তাঁর মেধা ও মনের গভীরতার পরিচয় পেয়ে শিক্ষকগণ অবাক হয়ে যান। চারিদিকে তার অসাধারণ মেধার কথা ছড়িয়ে পড়ে। পরে মুর্শিদাবাদের নবাব তাঁর মেধা কথা জানতে পেরে তাঁকে ডেকে পাঠান উচ্চ সরকারি পদ গ্রহণ করার জন্য। ইতোমধ্যে তাঁর পিতা মারা যান।

এদিকে বড়বোন মন্নুজান যৌবনে পদার্পন করেন। হাজি মুহাম্মদ মহসিন শিক্ষাকালে মন্নুজান হুগলিতে একাকি বাড়িতে থাকতেন। একদিকে তাঁর অনেক সম্পদ অন্য দিকে যুবতী মেয়ে। তাই কিছু দুষ্ট লোক তাঁর পেছনে ষড়যন্ত্র করতে লাগলো। মন্নুজান ষড়যন্ত্রের কথা জেনে ভাই হাজি মুহাম্মদ মহসিনকে পত্র পাঠান। পত্র পেয়ে হাজি মুহাম্মদ মহসিন বোনকে রক্ষায় বাড়ি ফিরে আসেন। ভাই মহসিনকে তিনি তাঁর সমুদয় সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেন। এবং
বোনকে সুপাত্রস্থ করার জন্য মহসিন চিন্তিত হয়ে পড়লেন। অবশেষে হুগলিতে নবাবের নিযুক্ত ফৌজদার সালাহউদ্দিনের সঙ্গে বোনের বিবাহ দিলেন। ধন–সম্পদের প্রতি নিরাসক্ত হাজি মুহাম্মদ মহসিন বোনের বিয়ের পর দেশ ভ্রমণে বের হন।
সফরকালে পবিত্র হজ পালন করে  মক্কা,মদিনা, কুফা, কারবালাসহ ইরান, ইরাক,আরব, তুরস্ক এমন নানা স্থান সফর করে দীর্ঘ ২৭ বছর পর দেশে ফিরে আসেন। তখন তাঁর বয়স ৬০ বছর। এদিকে নিঃসন্তান বোন মন্নুজান স্বামীকে হারিয়ে বিধবা। তিনিও বার্ধক্যে উপনীত। অন্যদিকে বিশাল সম্পদের মালিক আবার একাকি নিঃসঙ্গ। বোন মন্নুজান সম্পদের পেরেশানি থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর ধ্যানে জীবন কাটাতে ছোট ভাইয়ের নামে তাঁর সমস্ত সম্পদ লিখে দেন। সম্পদ লিখে দেয়া কয়েক বছর পর ১৮০৩ সালে মন্নুজান ইন্তেকাল করেন। হাজি মুহাম্মদ মহসিন ছিলেন ধার্মিক, দয়ালু  এবং দানবীর, তিনি সহজ সরল জীবনযাপন করতে পছন্দ করতেন। ৭০ বছরের হাজি মহসিন এ বিপুল সম্পদ দান সদকায় ব্যয় করার মনস্থ করলেন এবং বিশাল সম্পদ মানবতার কল্যাণে ব্যয় করেন। দেশের সকল গরীব–দুঃখী ও দুঃস্থদের সেবায় তিনি নিজের সব সম্পদ বিলিয়ে দেন। ১৮০৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ‘মহসিন ফান্ড’ নামক তহবিল প্রতিষ্ঠা করে তাঁর সমুদয় অর্থ এ ফাউন্ডেশনের জন্য দান করেন। এ ফান্ডের কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য দু'জন মোতাওয়াল্লি নিয়োগ করেন। শুধু মোতাওয়াল্লি নিয়োগই নয়, মহসিন ফান্ডের ব্যয় নির্বাহের জন্য দানকৃত সম্পত্তিকে নয়ভাগে ভাগ করেন।
তন্মধ্যে তিনভাগ সম্পদ ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য। চারভাগ সম্পদ পেনশন, বৃত্তি ও দাতব্য কর্মকাণ্ডে খরচ করার জন্য এবং দুইভাগ সম্পদ মোতাওয়াল্লিদের পারিশ্রমিকের জন্য বরাদ্দ করেন। তাছাড়া তাঁর দানকৃত অর্থে অসংখ্য দারিদ্র্য ছাত্রের পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হয়।
১৮০৬ সালে তিনি তাঁর প্রায় সমস্ত ভূ–সম্পত্তি একটি ওয়াকফ দলিলের মাধ্যমে দান করে যান। তাঁর মৃত্যুর পরে সেই সম্পত্তির পরিচালনা নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম শুরু হয়। ১৮৩৫ সালে আদালতের মাধ্যমে আইনি ঝামেলা মিটিয়ে সরকার মহসিন ট্রাস্টের দায়িত্ব গ্রহণ করে। ১৮৩৫ সালেই এই ট্রাস্টের অর্থে প্রতিষ্ঠিত হয় হুগলী মহসিন কলেজ এবং এই কলেজের সাথে হাজী মুহসীনের অর্থে পূর্বে নির্মিত দুটি স্কুলকে মিলিয়ে দেয়া হয়। উল্লেখ্য এইটিই ভারতবর্ষের প্রথম ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষার কলেজ যেখানে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে যেকেউ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারতো। এর আগে ১৮১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হিন্দু কলেজ ছিল শুধু ‘the sons of respectable Hindoos’ এর জন্য এবং ১৮১৮ ও ১৮২০ সালে প্রতিষ্ঠিত শ্রীরামপুর কলেজ ও বিশপস কলেজ ছিল খৃস্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, ভূদেব মুখোপাধ্যায়, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, অক্ষয় চন্দ্র সরকার, স্যার উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী,শরৎচন্দ্র টট্টোপাধ্যায় প্রমুখ ভুবনবিশ্রুত বাঙ্গালিরা সবাই এই হুগলী মহসিন কলেজের ছাত্র ছিলেন। অবশ্য ১৮৩৫ সালে ইংরেজ সরকার এর নাম হুগলী মহসিন কলেজ রাখলেও কোন এক কারণে দিনে দিনে মানুষের বলায় ও লেখায় এর নামটি দাঁড়ায় শুধু হুগলী কলেজ। মুহসীন শব্দটি ঝরে পড়ে যায়। ১৮৬০ সালের পরে কোনো কাগজপত্রে কিংবা সাইনবোর্ডে আর মুহসীন নামটা দেখাই যায় না। ১৯৩৬ সালে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় কলেজটি মূল নামে ফিরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং সে দাবি অনুযায়ী সরকারিভাবে পুনরায় কলেজটির নাম হয় হুগলি মহসিন কলেজ।
মহসিন ট্রাস্ট তথা মহসিন এনডাওমেন্ট ফান্ড এর সৃষ্টি শুধু হুগলি মহসিন কলেজ নয়। হুগলিতে একটি হাসপাতাল নিয়মিতভাবে এই অর্থে চলছে। মহসিনের সৈয়দপুর ট্রাস্ট এস্টেটের অধিকাংশ জমি ছিল যশোর ও খুলনায়। এই ট্রাস্ট এস্টেটের জমিতে অনেকগুলো দাতব্য হাসপাতাল, সরকারি অফিস, খুলনা–কলকাতা রেললাইন ছাড়াও গড়ে ওঠে অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। খুলনার দৌলতপুরের সরকারি ব্রজলাল কলেজের ৪২ একর জমির ৪০ একরই মহসিনের সৈয়দপুর ট্রাস্ট এস্টেটের জমি। ব্রজলাল কলেজের অনেক আগে ১৮৬৭ সালে মহসিন এনডাওমেন্ট ফান্ড এর অর্থে দৌলতপুরে তৈরি হয় একটি এ্যাংলো ভার্নাকুলার স্কুল। ১৯৩৯ সালে এর নামকরণ হয় দৌলতপুর মহসিন হাই ইংলিশ স্কুল। ১৮৮৬ সালে সরকারি অর্থে খুলনা জেলা স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু কিছুদিনেই স্কুলটি অর্থাভাবগ্রস্ত হয়ে পড়লে সরকারি সেই স্কুলটির জন্যও সরকার মহসিনের সৈয়দপুর ট্রাস্ট এস্টেট থেকে অর্থ মঞ্জুর করেন। এছাড়াও মহসিনের সৈয়দপুর ট্রাস্ট এস্টেটের অর্থে খুলনার দৌলতপুরে প্রতিষ্ঠিত হয় মহসিন বালিকা বিদ্যালয় ও মহসিন মহিলা কলেজ।

১৮৭৪ সালে মহসিন এনডাওমেন্ট ফান্ড এর অর্থে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে তিনটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকার মাদ্রাসাটি এখন সরকারি কবি নজরুল কলেজ ও চট্টগ্রামের মাদ্রাসাটি এখন হাজি মহম্মদ মহসিন কলেজ। আর রাজশাহীরটি এখন রাজশাহী গভর্নমেন্ট মাদ্রাসা নামে রাজশাহী বোর্ডের অধীনে ইসলামি শিক্ষা শাখায় আই এ সার্টিফিকেট প্রদানের প্রতিষ্ঠান রূপে চলছে।
নবাব আব্দুল লতিফ, নবাব খাজা আব্দুল গণি প্রমুখের আবেদন নিবেদনের ভিত্তিতে ১৮৭৩ সালে সরকার মহসিন এনডাওমেন্ট ফান্ডের অর্থে স্কলারশিপ মঞ্জুরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সরকার আরো সিদ্ধান্ত নেয় যে-যশোর, রংপুর,পাবনা, ফরিদপুর, বাকরগঞ্জ, ময়মনসিংহ,নোয়াখালি ও সিলেট জেলার স্কুলগুলোতে মুসলিম ছাত্রদের দুই তৃতীয়াংশ বেতন ও একজন আরবি শিক্ষকের বেতন এই ফান্ড খেকে দেয়া হবে। ১৯৩১ সালে বেঙ্গল এডুকেশন কোড মহসিন ফান্ডের বৃত্তির পরিমাণ ও সংখ্যা সুনির্দিষ্ট করে দেয়।
ধন–সম্পদের প্রতি নির্লোভ বাংলার শ্রেষ্ঠ দানবীর হাজি মুহাম্মদ মহসিন ১৮১২ সালে ৭৯ মতান্তরে ৮০ বছর বয়সে হুগলির নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন। তাকে হুগলির ইমামবাড়ায় দাফন করা হয়।
এ মহান দানবীর তাঁর অসামান্য দানের কারণে কিংবদন্তীতে পরিণত হন। তাঁর স্মরণে হুগলিতে প্রতিষ্ঠিত হয় হুগলি কলেজ। বাংলাদেশের ‘চট্টগ্রাম সরকারি হাজি মুহাম্মদ মহসিন কলেজ’ প্রতিষ্ঠা হয় তাঁর ওয়াকফকৃত অর্থ থেকে প্রাপ্ত অনুদানে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মহসিন হল’ এবং ঢাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ঘাঁটি ‘বিএনএস হাজি মহসিন’ও তাঁর স্মরণে নামকরণ করা হয়। পৃথিবীর ইতিহাসে যেকজন দানবীর মহামানবের নাম আসবে, তাদের মধ্যে বাংলার মহান দানবীর ও মুসলিম শিক্ষাজাগরনের অগ্রদূত হাজি মুহাম্মদ মহসীন অন্যতম একজন। তিনি ছিলেন, ব্যক্তিজীবনে ধর্মপরায়ন এবং সামাজিক জীবনে দানবীর ও শিক্ষানুরাগী। বাংলা তথা ভারত বর্ষের শিক্ষা ব্যবস্থায় হাজি মুহাম্মদ মহসীনের অবদান অতুলনীয় ও অনস্বীকার্য।

লেখকঃ
মুহাম্মদ মহসীন ভূঁইয়া
বিএসএস (অনার্স) এমএসএস (অর্থনীতি)।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।  mohsinbhuiyan1980@gmail.com
01712-643172

No comments:

Post a Comment