Thursday, March 28, 2019

ধর্ম চিন্তাঃ মুহাম্মদ মহসীন ভূঁইয়া

• ধর্ম চিন্তাঃ
(মুহাম্মদ মহসীন ভূঁইয়া)

মানুষের বিশ্বাস, মানুষ নিজের উপর যেই নিয়ম বা বিধান নিজে নিজে আরোপ করে, অর্থাৎ অন্যের বল প্রয়োগ বা প্ররোচনায় প্ররোচিত না হয়ে স্বেচ্ছায় নিজে উপর নিজে যে লিখিত বা অলিখিত নীতিমালা কায়েম করে তাকে ধর্ম বলে। কোন ব্যক্তি যখন নিজের উপর ইসলামের  বিধানে স্বেচ্ছায় কায়েম করে, তখন সে একজন ইসলাম ধর্মের অনুসারী হয় এবং তার ধর্মীয় পরিচয় হয় মুসলিম। আবার কেউ যদি হিন্দু মত মেনে নেয়, তখন সে একজন হিন্দু ধর্মীয় অনুসারী হয়। অর্থাৎ এই মেনে নেওয়াটা সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় হতে হবে। আজকের পৃথিবীতে এভাবেই ইসলাম, হিন্দু, জৈন, বৌদ্ধ, ঈসায়ীসহ শত শত মতবাদ বা বিশ্বাস মানুষ পালন করে। আবার একদল বিশ্বাসী আছে, যারা কোন নিয়ম বা বিধান কে মেনে চলতে চায়না। এরা হলো অবিশ্বাসী মতবাদে বিশ্বাসী,  এটাকেও আপনি একটা বিধান বা ধর্ম বলতে পারেন। যারা কোন নিদিষ্ট নিয়মে বিশ্বাসী নয়। তাহলে আমরা বলতে পারি-
ধর্ম হলো মানুষের স্বেচ্ছায় নিয়মের বিধানে বন্দি এমন এক জীবন ব্যবস্থা, যেখানে প্রত্যেক মানুষ নিজেকে অন্য শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করে দেয়। আর যারা আত্মসমর্পণ করেনা, তারা হলো অবিশ্বাসী ধর্মীয় বিধানে বিশ্বাসী। যেহেতু প্রত্যেক মানুষ কোন না কোন একটি নিয়ম বা বিধানে বিশ্বাসী, তাই সকল মানুষ আস্তিক ধর্মীয় মতে বিশ্বাসী , মানুষ নাস্তিক হতে পারেনা। তবে কেউ ইসলামে আস্তিক, কেউ হিন্দুতে আস্তিক আবার কেউ বৌদ্ধ বা ঈসায়ী বা জৈনতে আস্তিক। কেউ স্রষ্টায় আস্তিক অথবা কেউ স্রষ্টায়হীনতায় আস্তিক।
মানুষ আত্মশুদ্ধি ও আত্মমুক্তির জন্য দুনিয়ার জীবনে যে পথ অনুসরণ করে চলে তাকে ধর্ম বলে। যে যেপথে বিশ্বাস করে, সে সেই ধর্ম পথের বিশ্বাসী বা অনুসারী। মানুষ ধর্মমত বা পথ পালন করার একমাত্র কারণ হলো আত্মশুদ্ধি বা আত্মমুক্তি।  ধর্ম কখনও অসৎপথ বা মতে মানুষকে পরিচালিত করেনা। সকল ধর্মের মানুষ চায় মুক্তি,শান্তি ও শৃংখলা।  ধর্ম চিন্তায় মানুষ হলো সত্যের অনুসন্ধানী ও সত্য প্রাপ্তি পথিক মাত্র। এখানে হিংসা, হানাহানি, হত্যা ও জোর জুলুমের স্থান নেই। ধর্ম কখনও মানুষকে অমানবিক আচরণ শিক্ষা দেয়না। ধর্মের শিক্ষা হলো মানবতা, শান্তি, সহনশীলতা, সহমর্মিতা, সহাবস্থান, জীবে প্রেম, অহিংসা আর সৃষ্টির সেবার মাধ্যমে স্রষ্টার নৈকট্যের সন্ধান করা।

লেখকঃ
মুহাম্মদ মহাসীন ভূঁইয়া
বিএসএস (অনার্স) এমএসএস অর্থনীতি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

No comments:

Post a Comment