Friday, March 29, 2019

পার্বত্য অঞ্চল ও শান্তিচুক্তিঃ মুহাম্মদ মহসীন ভূঁইয়া







আমি অনেক দিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিষয় লিখবো বলে ভাবছিলাম, কিছুদিন আগে এবিষয় সোশ্যাল মিডিয়াতে একটা পোস্ট দেওয়ার পর অনেক পাঠক আমাকে বিভিন্ন বিষয় পরামর্শ ও সহযোগীতা করেছে, তাই প্রথমে তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আজ যে বিষয়টি নিয়ে লিখতেছি, এটা বাংলাদেশের সামাজনীতি, রাজনীতি ও অর্থনীতির সাথে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে জড়িত। তাই প্রথমে ঐ এলাকাটি সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং বসবাসরত জনগোষ্ঠীর আগমনের কিছুটা চিত্র তুলে ধরার প্রয়োজন মনে করছি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনপদটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের একটি পাহাড় ও বনভূমি এলাকা। এখানের তিনটি জেলা রাঙামাটি , খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান নিয়ে পার্বত্য অঞ্চল। চট্টগ্রাম বিভাগের এই এলাকা পাহাড়, বনভূমি ও উপত্যকায় পূর্ণ বলে এর নামকরণ হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। বাংলাদেশের আয়তনের এক দশমাংশ এই পার্বত্য এলাকা। মোট বনভূমির বিশাল অংশের এই অঞ্চল জুড়ে আছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম দিয়ে বয়ে চলা প্রধান নদী হল কর্ণফুলী । আর এই নদীতে বাঁধ দিয়ে কাপ্তাইতে উৎপাদন হচ্ছে জলবিদ্যুৎ।
এই অঞ্চলটিতে প্রধানত বসবাস করেন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সাইনো তিব্বতী মঙ্গোলয়ড ১৪ টি জাতিগোষ্ঠী, এরা বিভিন্ন কারণ ও গঠনার পরিক্রমায় এই অঞ্চলটিতে এসে বসবাস শুরু করেছেন। প্রায় ৫,০০,০০০ (পাঁচ লক্ষ)জনসংখ্যার অভিবাসী উপজাতি প্রধান দু'টি হলো চাকমা ও মারমা উপজাতি। এছাড়াও আছে ত্রিপুরা তঞ্চঙ্গ্যা, লুসাই, পাংখো, ম্রো, খিয়াং, বম,খুমি, চাক,গুর্খা, আসাম,সানতাল, এবং বিপুল সংখ্যক বহিরাগত বা স্যাটেলার বাঙ্গালী।
পার্বত্য অঞ্চলটি ১৫৫০ সালের দিকে প্রণীত বাংলার প্রথম মানচিত্রে বিদ্যমান ছিল। তবে এর প্রায় ৬০০ বছর আগে ৯৫৩ সালে আরাকানের রাজা এই অঞ্চল অধিকার করে শাসন করেছিলেন, ১২৪০ সালের দিকে ত্রিপুরার রাজা এই এলাকা দখল করে নিজ শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৫৭৫ সালে আরাকানের রাজা এই এলাকা পুনর্দখল করেন, এবং ১৬৬৬ সাল পর্যন্ত অধিকারে রেখে শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। মুঘল সম্রাজ্যের অধীনে ১৬৬৬ হতে ১৭৬০ সাল পর্যন্ত এলাকাটি সুবা বাংলার শাসন ছিল। ১৭৬০ সালে ইংল্যান্ড বা ব্রিটেনের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই এলাকা নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে নেন। ১৮৬০ সালে এটি ব্রিটিশ ভারতের অংশ হিসাবে যুক্ত হয়। ব্রিটিশরাই প্রথম এই এলাকার নাম দেয় চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস বা পার্বত্য চট্টগ্রাম। এটি চট্টগ্রাম জেলার অংশ হিসাবে বাংলা প্রদেশের অন্তর্গত ছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান আলাদা হলে এই এলাকা পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হয়। আবার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হওয়ার পর এই অঞ্চলটি বাংলাদেশের জেলা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৮০ এর দশকের শুরুতে পার্বত্য চট্টগ্রামকে তিনটি জেলা - রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি নামে বিভক্ত করা হয়।
১৯৪৭ সালে ভারত পাকিস্তান আলাদা হওয়ার পর এই অঞ্চলে কিছু পাহাড়ি উপজাতি সংগঠন বিভিন্ন দাবী নিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। তার মধ্যে কিছু কিছু প্রকাশ্যে পাহাড়িদের জন্য কাজ করে আবার কিছু সংগঠন গোপনে কাজ করেছে। তবে এসব সংগঠনের কর্মকান্ড বেশি প্রকাশিত হয় ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি ১৯৭৩ প্রতিষ্ঠিত হয়। (জে এস এস) হলো বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দল যা চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলের  উপজাতি  গোষ্ঠির অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনটি স্বায়ত্তশাসন ও জাতিগত পরিচয়ের স্বীকৃতি এবং পার্বত্য অঞ্চলের উপজাতির অধিকারের জন্য লড়াই করে আসছে। ১৯৭৫ সালে এই দলটি নিজেদের গোপন সামরিক শাখা (শান্তিবাহিনী) প্রতিষ্ঠা করেন, এবং এরপর থেকে নিজেদের অধিকার আদায়ের ব্যানারে  সরকারি বাহিনী ও বাঙালি বসতি স্থাপনকারীদের সাথে লড়াই করে আসছে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত প্রায় ২২ বছর এই বাহিনীর সাথে সরকারে বিভিন্ন বাহিনী ও সেটেলার ভাঙ্গালীদের অনেক বার রক্তক্ষয়ী সংঘাত হয়ছে। এসব সংঘাত সংঘর্ষের জন্য প্রধানত দায়ি সরকারের  দু'টি নীতি, এক- হঠাৎ করে সরকার বিভিন্ন স্হান থেকে ভাসমান অতি সাধারন নাগরিক ও শহরের বিভিন্ন বস্তিতে বসবাসকারী  নিম্ন আয়ের বাঙ্গালী নাগরিকদের রাতে আঁধারে এনে পার্বত্য অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে দেন। দুই- ঐ অঞ্চলের পাহাড়ি ও সেটেলার ভাঙ্গালিদের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি  পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করে দিয়েছিল। এছাড়া আমাদের প্রতিবেশি রাষ্ট্রের সরকার একচেটিয়া ভাবে পাহাড়িদের সাহায্যের নামে সামরিক সমর্থন দিয়ে উস্কানি দিয়েছিল এবং বাংলাদেশে ভুমিকে দিখন্ডিত করে দুর্বল রাষ্ট্রে বানাতে চেয়েছিল।  ১৯৯৭ সালে সরকার নিজ ভুখন্ডে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য, অতিতের নেওয়া পদক্ষেপ থেকে ফিরে এসে পাহাড়ি ও বাঙ্গালির মাঝে সংঘর্ষ বন্ধের লক্ষ্যে, সরকার ও উপজাতিয় পাহাড়ি সংগঠন (জে এস এস) একটি ঐতিহাসিক চুক্তি করেন। যে চুক্তির মূলত শান্তি বাহিনীকে নিরস্ত্রীকরন ও জে.এস.এসকে রাজনীতির মূল ধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য  হয়েছিল। যার প্রেক্ষিতে ১৯৯৭ সালে সরকারের সাথে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আর এই চুক্তিকে বাংলাদেশের ইতিহাসে শান্তিচুক্তি  বলা হয়।
এছাড়াও ১৯৭৩ সালে আগে অর্থাৎ জেএসএস সৃষ্টির পূর্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরা ছাত্রদের সংগঠন ছিল এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উপজাতীয় কল্যাণ সমিতি যা ১৯৬০-এর দশকে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের আমলে-এ সংগঠিত হয়েছিল। রাঙামাটিতে কাপ্তাই বাঁধ নির্মানের ফলে অনেক অধিবাসী বাস্তুচ্যুত বা ভিটে মাটি হারা হয়েছেন, যাদের পক্ষে সেসময় সংগঠনটি প্রায় ১০০০০০ মানুষের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে। পরে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ সৃষ্টির পর পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা যেমন, চাকমা রাজনীতিবীদ চারু বিকাশ চাকমা ও মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা এ অঞ্চলের মানুষের স্বায়ত্তশাসন এবং আদিবাসী স্বীকৃতির অধিকার দাবি করেন। লারমা ও অন্যান্য প্রতিবাদকারীরা বাংলাদেশের সংবিধানের খসড়ার প্রতিবাদ করে যদিও সংবিধানে জাতিগত পরিচয় স্বীকৃত ছিল কিন্তু তারা বাংলাদেশ থেকে পূর্ণ সার্বভৌমত্ব ও বিচ্ছেদ চেয়েছিলেন। বাংলাদেশ সরকারের নীতি অনুযায়ী, বাংলা সংস্কৃতি ও বাংলা ভাষা একমাত্র স্বীকৃত এবং বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সকলেই বাঙালি (পরে বাংলাদেশি) নামে পরিচিত। মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার নেতৃত্বে একটি পার্বত্য প্রতিনিধি দল দেশের প্রতিষ্ঠাতা নেতা , বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে আলোচনা করতে যান এবং শেখ মুজিব পার্বত্য জাতিগোষ্ঠীর বাঙালি পরিচয় গ্রহণের উপর জোড় দেন। এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐ অঞ্চলের স্থানীয়দের দ্বারা বিদ্রোহ হওয়ার আশংঙ্কায় সর্বপ্রথম পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি বসতি স্থাপন করে স্থানীয়দের সংখ্যা হ্রাস করতে চেয়েছিলেন। যার ধারাবাহিকতায় পরে জিয়াউর রহমান ও এরশাদ সরকার একই ভাবে ঐ অঞ্চলটিকে নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভাসমান ভাঙ্গালি নাগরিকদের পার্বত্য এলাকায় সেটেল করেন এবং সরকারি বাহিনীর ও সেটেলার বাঙ্গালিরা যৌথভাবে পাহাড়ি বিদ্রোহীদের দমনের নামে সামরিক ও বেসামরিক নাগরিকেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। ১৯৯৭ সালের পূর্বে এই এলাকার চিত্র ছিল খুবই ভয়াবহ ও নাজুক। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৭ সালে জে এস এস সহ পাহাড়ি বিদ্রোহী শান্তিবাহিনীর সাথে শান্তিচুক্তি করেন। যদিও ততকালিন বিরোধী দল বিএনপিসহ জামায়ত এবং পার্বত্য  ভাঙ্গালীদের কিছু সংগঠন এই চুক্তির বিরোধীতা করেন। তবে এদেশের বেশিরভাগ জনগণ বহিবিশ্ব এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছিল এবং আওয়ামী লীগ সরকার এই ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি করার কারণে আজ প্রায় ২১ বছর পার্বত্য এলাকায় একটি সুন্দর ও স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে এসেছে। যদিও স্বাধীনতা পরবর্তী ২১ টি বছর বাংলাদেশের এক দশমাংশ এলাকা পার্বত্য অঞ্চল ছিল নরকের মত। সাধারণ নাগরিকেরা ছিল শান্তিবাহিনী ও বাঙ্গালী সেটেলার বাহিনীর কাছে জিম্মি।  জ্বালাও পোড়াও আর হত্যা ছিল একটি নিয়মিত কর্মকান্ডের মত। ১৯৯৭ এর আগে পাহাড়ি উপজাতি ও বহিরাগত সেটেলার ভাঙ্গালী একে অপরকে শত্রু মনে করতো, রাতের আধারে হামলা পাল্টা হামলা ছিল তাদের নিয়মিত কাজ। সংবাদ মাধ্যম, বিদেশী সংস্থা ও পর্যটক শূন্য ছিল পার্বত্য অঞ্চল। ব্যবসা বাণিজ্য পিছিয়ে ছিল অঞ্চলটি।সরকার আর উপজাতিদের মাঝে বিশ্বাসের ছিল ব্যাপক ফারাক। এই জন্য একদিকে দায়ী ছিল, কিছু অতি উৎসাহি বিদ্রোহী উপজাতীয় সংগঠন এবং অপর দিকে সরকার অবিশ্বাস নীতির জন্য সেখানে ভাসমান বাঙ্গালীদের এনে বসতি স্থাপন করেছিল। বিদ্রোহীদের দমনের নামে সরকারি বাহিনীর দমন নিপীড়ন আর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জনপদ অনেকাংশেই পিছিয়ে পড়ে।পাশাপাশি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অযাচিত উস্কানি মুলক ইন্ধন ও সাময়িক অস্ত্রপাতি দিয়ে সহযোগীতা করে যুদ্ধ বাধাতে চেয়েছিল এবং ১৯৯৭ সালের আগে তারা অনেকটা সফলও বলা যায়। আমাদের প্রতিবেশীরা চেয়েছিল, ১৯৭১ অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশকে আবারও ভেঙ্গে নতুন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হোক। অবশ্যই তারা ১৯৯৭ এর চুক্তির পর সম্পূর্ণ ভাবে ব্যর্থ, এবং ভবিষ্যতে ও সফল হবেনা(ইনশাআল্লাহ)।

মুহাম্মদ মহসীন ভূঁইয়া
বিএসএস(অনার্স)এমএসএস (অর্থনীতি)।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। 







Thursday, March 28, 2019

ধর্ম চিন্তাঃ মুহাম্মদ মহসীন ভূঁইয়া

• ধর্ম চিন্তাঃ
(মুহাম্মদ মহসীন ভূঁইয়া)

মানুষের বিশ্বাস, মানুষ নিজের উপর যেই নিয়ম বা বিধান নিজে নিজে আরোপ করে, অর্থাৎ অন্যের বল প্রয়োগ বা প্ররোচনায় প্ররোচিত না হয়ে স্বেচ্ছায় নিজে উপর নিজে যে লিখিত বা অলিখিত নীতিমালা কায়েম করে তাকে ধর্ম বলে। কোন ব্যক্তি যখন নিজের উপর ইসলামের  বিধানে স্বেচ্ছায় কায়েম করে, তখন সে একজন ইসলাম ধর্মের অনুসারী হয় এবং তার ধর্মীয় পরিচয় হয় মুসলিম। আবার কেউ যদি হিন্দু মত মেনে নেয়, তখন সে একজন হিন্দু ধর্মীয় অনুসারী হয়। অর্থাৎ এই মেনে নেওয়াটা সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় হতে হবে। আজকের পৃথিবীতে এভাবেই ইসলাম, হিন্দু, জৈন, বৌদ্ধ, ঈসায়ীসহ শত শত মতবাদ বা বিশ্বাস মানুষ পালন করে। আবার একদল বিশ্বাসী আছে, যারা কোন নিয়ম বা বিধান কে মেনে চলতে চায়না। এরা হলো অবিশ্বাসী মতবাদে বিশ্বাসী,  এটাকেও আপনি একটা বিধান বা ধর্ম বলতে পারেন। যারা কোন নিদিষ্ট নিয়মে বিশ্বাসী নয়। তাহলে আমরা বলতে পারি-
ধর্ম হলো মানুষের স্বেচ্ছায় নিয়মের বিধানে বন্দি এমন এক জীবন ব্যবস্থা, যেখানে প্রত্যেক মানুষ নিজেকে অন্য শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করে দেয়। আর যারা আত্মসমর্পণ করেনা, তারা হলো অবিশ্বাসী ধর্মীয় বিধানে বিশ্বাসী। যেহেতু প্রত্যেক মানুষ কোন না কোন একটি নিয়ম বা বিধানে বিশ্বাসী, তাই সকল মানুষ আস্তিক ধর্মীয় মতে বিশ্বাসী , মানুষ নাস্তিক হতে পারেনা। তবে কেউ ইসলামে আস্তিক, কেউ হিন্দুতে আস্তিক আবার কেউ বৌদ্ধ বা ঈসায়ী বা জৈনতে আস্তিক। কেউ স্রষ্টায় আস্তিক অথবা কেউ স্রষ্টায়হীনতায় আস্তিক।
মানুষ আত্মশুদ্ধি ও আত্মমুক্তির জন্য দুনিয়ার জীবনে যে পথ অনুসরণ করে চলে তাকে ধর্ম বলে। যে যেপথে বিশ্বাস করে, সে সেই ধর্ম পথের বিশ্বাসী বা অনুসারী। মানুষ ধর্মমত বা পথ পালন করার একমাত্র কারণ হলো আত্মশুদ্ধি বা আত্মমুক্তি।  ধর্ম কখনও অসৎপথ বা মতে মানুষকে পরিচালিত করেনা। সকল ধর্মের মানুষ চায় মুক্তি,শান্তি ও শৃংখলা।  ধর্ম চিন্তায় মানুষ হলো সত্যের অনুসন্ধানী ও সত্য প্রাপ্তি পথিক মাত্র। এখানে হিংসা, হানাহানি, হত্যা ও জোর জুলুমের স্থান নেই। ধর্ম কখনও মানুষকে অমানবিক আচরণ শিক্ষা দেয়না। ধর্মের শিক্ষা হলো মানবতা, শান্তি, সহনশীলতা, সহমর্মিতা, সহাবস্থান, জীবে প্রেম, অহিংসা আর সৃষ্টির সেবার মাধ্যমে স্রষ্টার নৈকট্যের সন্ধান করা।

লেখকঃ
মুহাম্মদ মহাসীন ভূঁইয়া
বিএসএস (অনার্স) এমএসএস অর্থনীতি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

Wednesday, March 6, 2019

বাড়িওয়ালা

বাড়িওয়ালা

বাড়িওয়ালার কান্ড
নামায পড়ে রোজা রাখে
আসলে সে ভন্ড।
নীতিহীন ভ্রষ্ট লোক
অতি স্বার্থবাজ,
ভাড়াটিয়া কষ্ট দেওয়া
এই লোকের কাজ।
বাসাটি যেমন তেমন
ভাড়া দ্বিগুণ,
টাকা দিতে হলে দেরি
জ্বলে বেগুন।
গ্যাসহীন বাসায় থাকি
বিদুৎ চমৎকার,
বছর শেষ নাহতে
ভাড়া বাড়ানোর পুরষ্কার।

Friday, March 1, 2019

৭১ পরাজিতরা আবারও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করছেঃ (মহসীন ভূঁইয়া)

৭১ পরাজিতরা আবারও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করছেঃ মহসীন ভূঁইয়া

জাতীয় প্রেসক্লাবে  বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত "সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতি প্রতিরোধে রাজনীতিকদের করণীয়" শীর্ষক আলোচনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে লেবার পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মহসীন ভূঁইয়া বলেন, গত ৩০ তারিখ নির্বাচনের ফলাফল প্রমাণ করে এদেশের ষোলো কোটি মানুষ ৭১ পরাজিতদের প্রত্যাখ্যান করেছে। মানুষ এখন স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির সাথে আছে। উন্নয়ন আর গণতন্ত্রের পক্ষে মানুষ রায় দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার দুর্নীতি, মাদক আর সন্ত্রাসের বিরোদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছে। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদের সবাইকে দেশপ্রেমিক হতে হবে এবং মাদক,  সন্ত্রাস ও দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনে সরকারের পাশে থাকতে হবে কারণ ৭১ পরাজিতরা আবারও দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করছে।
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদীর সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব আবদুল্লাহ আল মামুনের পরিচালনায়  অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি, যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট ডাঃ এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
আরো বক্তব্য রাখেন বিএলডিপির চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, বিকল্প ধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক এম পি ও চাকসু ভিপি শাহ মাজহারুল হক চৌধুরী, বিকল্প ধারার ভাইস চেয়ারম্যান এনায়েত কবির, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া,জন দলের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী,বাগসদ সভাপতি সরদার শামস আল মামুন,ইসলামী গণতন্ত্র পার্টির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, লেবার পার্টির নেতা সুরুজ্জামান, রাজু আহমেদ পোদ্দার, জিয়াউর রহমান, কামরুল ইসলাম সুরুজ প্রমুখ।